বিজনেস স্কুলগুলোতে ভর্তির ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই অনেক বেশি প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে হয়। ভালো সিজিপিএ আর জিম্যাট স্কোর তো লাগেই, তবে টপ বিজনেস স্কুলগুলোতে ভালো একাডেমিক প্রোফাইলের সাথে অন্যান্য অনেক বিষয় দেখা হয় এবং মাপার চেষ্টা করা হয় বিজনেস প্রফেশনাল হিসেবে আপনার সম্ভাবনা কতটুকু। বিবিএ অধ্যয়নরত অনেক শিক্ষার্থীদেরই স্বপ্ন থাকে ভালো একটি বিজনেস স্কুল থেকে এমবিএ করার। ২য় কিংবা ৩য় বর্ষ থেকে সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে এগিয়ে গেলে এই স্বপ্নকেও সত্যি করা সম্ভব! ১৬ বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন একজন এমবিএ এডমিশন কনসালটেন্টের মতে মানসম্পন্ন বিজনেস স্কুল গুলো সবসময়ই এমন শিক্ষার্থী চায় যার লিডারশিপ স্কিল বা নেতৃত্ব প্রদানের গুণ প্রমাণিত। মানে একটা গ্রুপ বা সংগঠনের সাধারণ মেম্বার হওয়ার থেকে একধাপ এগিয়ে। বিজনেস স্কুলগুলো সেসব শিক্ষার্থীদেরকে খুঁজে যারা শুধু মেম্বার হিসেবে না থেকে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে নেতৃত্ব দেয় এবং অন্যদেরকেও নিজের দিকে আকৃষ্ট করতে পারে। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে স্কুলগুলো শুধু একরকম বা নির্দিষ্ট একটি ক্ষেত্রেই কাজ করা আবেদনকারী চায় না। বরং তারা চায় কাজের মধ্যে বৈচিত্র্য। কিন্তু প্রথমে ভালো সিজিপিএ আর জিম্যাট স্কোর এবং ক্ষেত্রবিশেষে আইইএলটিএস দরকার। নাহলে প্রাথমিক পর্যায়েই বাদ পরে যেতে হবে। এই যেমন হারভার্ড বিজনেস স্কুলের কথাই ধরা যাক। টোফেলে ন্যূনতম ১০৯ বা আইইএলটিএসে ন্যূনতম ৭.৫ লাগবে আপনার। এর নিচে থাকলেও আবেদন করতে পারবেন, তবে মনে রাখবেন হারভার্ডের এক্সেপ্টেন্স রেট কিন্তু সাড়ে দশের কিছু বেশি। মানে প্রতি ১০০ জন আবেদনকারীর মধ্যে ১০ জন শেষ পর্যন্ত সুযোগ পায়। এর সাথে আপনার রিজুমি আর এক পৃষ্ঠার রচনা লাগে। এই Application Essay বা এক পৃষ্ঠার রচনা নিয়ে কিছু বলি। আপনার উপরের রিকোয়ারমেন্টগুলো মানে একাডেমিক রেকর্ড যদি খুব ভালো হয় তাহলে ভালো একটি রচনা আপনার আবেদনের জন্য খুব একটা ম্যাটার করবে না (তাই বলে যেনোতেনো লিখলেই হবে তা না)। আবার আপনার বাকি রিকোয়ারমেন্ট যদি খুবই খারাপ হয় তাহলে ভালো রচনা এক্ষেত্রে কোনো কাজে লাগবে না। এই রচনা খুবই গুরুত্বপুর্ন মাঝামাঝি লেভেলের আবেদনগুলোর জন্য। সাধারণ একজন শিক্ষার্থী থেকে এডমিশন অফিসারের কাছে অসাধারণ হয়ে ওঠার মারনাস্ত্র হলো এই রচনা। একই রকম প্রোফাইলের শিক্ষার্থীদের থেকে কাদেরকে শেষ পর্যন্ত বেছে নেয়া হবে তা এই রচনার উপর নির্ভর করে। তাই এখানে বাড়তি নজর দিন। প্রয়োজনে অভিজ্ঞ কাউকে দিয়ে একবার চেক করিয়ে নিতে পারেন সাবমিট করার আগে। হারভার্ড বিজনেস স্কুলে আবেদন করতে আপনাকে ২৫০ ডলার আবেদন ফি দিতে হবে। এক্ষেত্রে আমাদের সাহায্য নিতে পারেন। আবেদন ফি আপনার সুবিধামত রকেট অথবা বিকাশে পাঠাতে পারবেন, আমরা সেই আবেদন ফি দ্রুত সময়ের মধ্যে পাঠিয়ে দেবো। আপনার আবেদন এবং Application Essay পড়ে এডমিশন অফিসার আপনাকে উপযুক্ত মনে করলে স্কাইপেতে ইন্টারভিউ নেয়ার জন্য ডাকবে। এটা সাধারণত ৩০ মিনিটের হয়। নিজের জিপিএ আর জিম্যাট স্কোর নিয়ে শুধু শুধু হতাশ না হয়ে দেখে নিন আমেরিকার টপ বিজনেস স্কুলগুলোতে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া শিক্ষার্থীদের এভারেজ প্রোফাইল আর খরচ। জিম্যাটের প্রস্তুতি ও খুঁটিনাটি ব্যপার নিয়ে আমাদের ২ পর্বের ধারাবাহিক লেখাটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন- প্রথম পর্ব, দ্বিতীয় পর্ব এছাড়া বিজনেস স্কুলগুলোও বর্তমানে জিআরই স্কোর গ্রহণ করছে। তাই জিআরই দিয়ে থাকলে নতুন করে জিম্যাট দেয়া লাগবে না। আমাদের এই লেখার উদ্দেশ্য শুধুমাত্র বোঝানো যে এগুলোতে ভর্তি হওয়া কিছুটা কঠিন তবে অসম্ভব না। হয়ত চেষ্টা করলে আপনিও পারবেন। যদি স্বপ্ন থাকে টপ বিজনেস স্কুলে পড়ার তাহলে এখন থেকেই টার্গেট সেট করে এগিয়ে যাও! শুভকামনা রইল। ছোট করে জানিয়ে দিই, আগস্টের শেষ সপ্তাহে আমরা একটি সেমিনার করতে যাচ্ছি যেখানে আন্ডারগ্রাজুয়েটে বাইরে পড়াশোনার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে, কথা হবে টোফেল নিয়েও। সেমিনারের বিস্তারিত পাবেন এখানে স্কলারশিপ সম্পর্কিত তথ্যকে আরো সহজলভ্য করার লক্ষ্যে আমাদের নিরন্তর প্রচেষ্টার ধারাবাহিকতায় আমাদের নতুন বিভাগ “হাতেখড়ি” স্কলারশিপের বিভিন্ন খুঁটিনাটি ব্যাপারগুলোকে শিক্ষার্থীদের কাছে তুলে ধরার জন্য কাজ করবে হাতে খড়ির টিম মেম্বাররা। আমাদের আন্তরিক প্রচেষ্টা থাকবে জিআরই, বিশ্ববিদ্যালয় সন্ধান, কন্টাক্ট আর এসওপি, রেকমেন্ডেশান, এপ্লিক্যাশান, ভিসা, ইন্টারভিঊ সহ স্কলারশিপের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন দিক ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করা।আপনারাও লিখতে পারবেন হাতেখড়িতে! স্কলারশিপের সাথে সম্পর্কিত যেকোনো লেখাকে স্বাগতম। আপনার লেখা পাঠান এই ঠিকানায়- kholabakso@gmail.com |