এই লেখাটি মূলত এখন যারা এইচএসসিতে পড়ছে তাদের জন্য লেখা। আন্ডারগ্র্যাডে অক্সফোর্ডে আবেদন করতে চাইলে এইচএসসি প্রথম বর্ষ থেকেই একটু একটু করে গুছিয়ে নিতে পারেন। অক্সফোর্ডে পড়ার সুযোগ পাওয়া কঠিন তবে অসম্ভব কিছু নয়। তাই চেষ্টা করে দেখতে দোষ কি! পুরো আবেদন প্রক্রিয়াটি সহজভাবে বোঝানোর চেষ্টা করব। যে অনুযায়ী সঠিকভাবে প্রস্তুতি নিলে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরাও স্কলারশিপ নিয়ে অক্সফোর্ডে পড়তে পারবে। প্রাচ্যের অক্সফোর্ডকে ছাড়িয়ে সত্যিকারের অক্সফোর্ডকে ছুঁয়ে দেয়ার ইচ্ছা থাকলে লেখাটি আপনার জন্যই। অনেকে ভেবে থাকে অক্সফোর্ডে ভর্তি হতে গেলে এক্সট্রা কারিকুলার একটিভিটি অনেক বেশি ভূমিকা রাখে। এটা ইউএসের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে সত্য, তবে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক অর্জনগুলোকেই বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকে। এক্সট্রা কারিকুলার একটিভিটি থাকলে ভালো, তবে খুব একটা না থাকলে এ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। আবেদন করার আগেই আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আপনি কোন বিষয়ে আন্ডারগ্র্যাড করতে চান। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় কয়েকটি কলেজের সমন্বয়ে গঠিত। আন্ডারগ্র্যাডে যখন আবেদন করবেন তখন আপনাকে নির্দিষ্ট কলেজে আবেদন করতে হবে, সরাসরি অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করা যায় না। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা, গবেষণাগার এবং কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরিচালনা করে। যে কলেজগুলো আন্ডারগ্র্যাজুয়েট এডমিশন নেয়া যাবে –
অর্থাৎ, বিষয় নির্বাচন করার পর আপনাকে খুঁজতে হবে কোন কোন কলেজগুলো উক্ত বিষয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করে। ধরা যাক আপনি পদার্থবিজ্ঞানে পড়তে চান, তাহলে পদার্থবিজ্ঞান যে যে কলেজে পড়ানো হয় সেগুলো থেকে আপনাকে কলেজ নির্বাচন করতে হবে। প্রতিটি কলেজে তারা যেসব বিষয় পড়ায় সেগুলোর জন্য নির্দিষ্ট সংখ্যক আসন থাকে। তাই পদার্থবিজ্ঞানের জন্য যারা আবেদন করেছেন তাদের সবার সাথে আপনাকে প্রতিযোগিতা করতে হবে না, বরং যারা পদারথবিজ্ঞানে পড়ার জন্য শুধু ঐ কলেজে আবেদন করবে শুধু তাদের সাথেই আপনাকে প্রতিযোগিতা করতে হবে। কিছু কলেজ অন্য কলেজগুলোর চাইতে তুলনামূলকভাবে বেশি প্রেস্টিজিয়াস, সেগুলোতে প্রতিযোগিতাও অন্যগুলোর চাইতে বেশি। যেমন ক্রাইস্ট চার্চে ভর্তি হওয়া তুলনামূলক কঠিন। তাই বুদ্ধি করে কম প্রতিযোগিতার কলেজ সিলেক্ট করলে চান্স পাওয়ার সম্ভাবনা কিছুটা বাড়বে। আপনার পছন্দের বিষয়টি কোন কোন কলেজে পড়া যাবে তা জানতে পারবেন এখান থেকে আবেদন করতে হবে UCAS প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে। এই প্ল্যাটফর্ম বা সাইট ব্যবহার করে ইউকের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও আবেদন করা যাবে। অক্সফোর্ডে অন্যদের তুলনায় আগেই আবেদনের সময় শেষ হয়ে যায়। আবেদন করতে হবে সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর মাসের মধ্যে। তাই আইইএলটিএস এর আগেই দিয়ে দিতে হবে যাতে সময়মত আবেদন করতে সমস্যা না হয়। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের এইচএসসি সার্টিফিকেট পরীক্ষাকে এ- লেভেলের সমমান হিসেবে রিকগনাইজ করে না। তাই এইচএসসি পরীক্ষার্থীদেরকে তাদের পছন্দের বিষয় এবং কলেজের রিকোয়ারমেন্ট দেখে সেপ্টেম্বরের আগেই SAT দিয়ে দিতে হবে। অনলাইন আবেদনের সময় ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে আবেদন ফি প্রদান করতে হবে। আবেদনের ক্ষেত্রে আমাদের অনলাইন সাপোর্ট নিতে পারেন। পুরো অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়ায় অনলাইন সাপোর্ট পাবেন মাত্র ১০০০ টাকায়। অনলাইন আবেদনের ক্ষেত্রে খোলা বাকসো অনলাইন সাপোর্টের জন্য স্লট পেতে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করুন। আবেদন করার পর কিছু কিছু প্রোগ্রামের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত পরীক্ষা দিতে হয়। যেমন পদার্থ বিজ্ঞানে আবেদন করলে Physics Aptitude Test (PAT) দিতে হবে। আপনার পছন্দের বিষয়ের জন্য এরকম কোনো পরীক্ষা দেয়া লাগবে কিনা বা দেয়া লাগলে কি পরীক্ষা দেয়া লাগবে তা এখান থেকে জানতে পারবেন। এধরনের পরীক্ষাগুলো ব্রিটিশ কাউন্সিলের সহায়তায় হোম কান্ট্রিতেই নেয়ার ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। তাই বাংলাদেশে বসেই এ পরীক্ষা দিতে পারবেন। এপর্যন্ত টিকে থাকতে পারলে আপনাকে ইন্টার্ভিউ দিতে বলা হবে। গুগল করলে স্যাম্পল কোশ্চেন পাবেন যেগুলো ইন্টারভিউতে জিজ্ঞাসা করা হতে পারে। ইন্টারভিউতে টিকে গেলে আপনি কলেজের সাইটে গিয়ে অফার করা স্কলারশিপগুলো দেখে স্কলারশিপের জন্য আবেদনও করতে পারবেন। যেমন রিচ অক্সফোর্ড স্কলারশিপ পেলে টিউশন ফি, থাকা-খাওয়া, বিমান টিকেট কভার হয়ে যাবে। অনুপ্রেরণা পাবার জন্য একটি তথ্য দিই। বর্তমানে অক্সফোর্ডে আন্ডারগ্র্যাড লেভেলে ৪ জন এবং গ্র্যাজুয়েট লেভেলে ২১ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। আর আমাদের প্রতিবেশি দেশ ভারত থেকে পড়ছে ৩৮৬ জন। এবার ঢাল তলোয়ার নিয়ে নিজের মত করে এগিয়ে যাও। আর কোনো প্রশ্ন থাকলে এখানেই কমেন্টে জানাতে পারো। এমাইটি, হার্ভাডে পড়তে কি কি করতে হবে দেখে নাও এখানে |