স্কলারশিপ
স্কলারশিপ
  • হোম
  • নতুন আপডেট
  • হাতেখড়ি
  • আমাদের সেবাসমূহ
  • যোগাযোগ
  • আমাদের লক্ষ্য
  • হোম
  • নতুন আপডেট
  • হাতেখড়ি
  • আমাদের সেবাসমূহ
  • যোগাযোগ
  • আমাদের লক্ষ্য
Picture

ICCR স্কলারশিপ এবং কিছু কথা 

11/30/2016

Comments

 
বাংলাদেশে বর্তমানে অন্যতম জনপ্রিয় বৈদেশিক শিক্ষাবৃত্তিটির নাম 'Indian Council for Cultural Relations’ বা ICCR স্কলারশিপ। আমি ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে এই স্কলারশিপ পেয়ে আহমেদাবাদে অবস্থিত গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করতে এসেছি। হয়তো সে কারণেই, অনেকেই এই স্কলারশিপটি সম্বন্ধে যোগাযোগ করে বিস্তারিত জানতে চেয়েছেন। তাই এই লেখার অবতারণা।


ভারত সরকার বাংলাদেশের পাশাপাশি ইউরোপ-আমেরিকা-আফ্রিকা-এশিয়ার মোট ৭৩টি দেশের শিক্ষার্থীকে এই স্কলারশিপ দিচ্ছে। তবে, প্রতিযোগিতার কথা বিবেচনা করলে, বাংলাদেশ থেকেই এই স্কলারশিপ পাওয়া সবচেয়ে কঠিন। প্রতি বছর Bangladesh Scholarship Scheme ICCR-এর (আবেদনপত্রের প্রথম পৃষ্ঠার ক্রমিক ১১) আওতায় মোট ২০০ জন স্কলারকে নির্বাচন করা হয়। কিন্তু আবেদন করেন প্রায় কয়েকগুণ এবং প্রতি বছরই আবেদনকারীর সংখ্যা বাড়ছে!
Picture
সাধারণত, নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসের দিকে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয় বাংলাদেশস্থ ভারতীয় হাই কমিশনের ওয়েবসাইট ও দু-একটি জনপ্রিয় দৈনিকে। সময়ও খুব কম থাকে। বড়জোর ১০ দিন। পাসপোর্টটা (অবশ্যই মেশিন রিডেবল) এই সময়ের মধ্যে প্রস্তুত থাকলে খুবই ভালো হয়। কারণ, আবেদনপত্রে পাসপোর্ট নম্বর দিতে হয়। পাসপোর্ট না থাকলে লিখে দিতে পারেন, ‘Passport Under Process’; তবে, তাতে আপনি নিশ্চিন্ত হতে পারবেন, এমন নিশ্চয়তা দেওয়া যাবে না!



সতর্কতার জন্য বলছি, তুমুল এই প্রতিযোগিতায় যারা শুরুতেই বাদ পড়ে যান, তারা মূলত সঠিকভাবে আবেদন ফরম পূরণ করতে না পারার কারণে বাদ পড়েন। কম্পিউটার কম্পোজের মাধ্যমে ঠিকঠাক পূরণ করে, প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদিসহ স্ক্যান করে পিডিএফ ফাইল আকারে ডেডলাইনের মধ্যে মেইল করাটাই তাই প্রথম বড় চ্যালেঞ্জ।



মনে রাখবেন, কেবল আপনার পূর্ণ নামের স্বাক্ষরটি ছাড়া আর কিছু হাতে লেখা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। স্বাক্ষরটি স্ক্যান করে নিয়ে ইমেজ আকারে ব্যবহার করবেন। ১০ পৃষ্ঠার আবেদন ফরম, ডাটাশিট, ইন্সট্রাকশন পেপারসহ সব ডকুমেন্ট ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করার পর ইন্সট্র্যাকশন পেপারটি অন্তত তিনবার আগাগোড়া পড়ে ফেলে ফর্ম পূরণ করলে অনেক কিছুই সহজ হয়ে যাবে।
আপনার আবেদন গৃহীত হলে, কিছুদিন পর English Proficiency Test (EPT) নামক লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার ডাক পাবেন ওই মেইলের মাধ্যমেই। পরীক্ষাটা হয় ৩০ মিনিটের ও সর্বোচ্চ ৩০ নম্বরের। সাধারণত ইংলিশ গ্রামার থেকে প্রশ্ন হয়। যাদের বেসিক ভালো, তাদের উতরানোর সম্ভাবনা বেশি।



উতরাতে পারলে আপনাকে ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন থেকে মোবাইলে কল করে মৌখিক পরীক্ষায় (Viva) ডাকা হবে। মনে রাখবেন, এই কলটা করা হয় মৌখিক পরীক্ষার আগের দিন! এই পরীক্ষায় কথা অবশ্যই ইংরেজিতে বলতে হবে। তবে, ঘাবড়ানোর কিছু নেই।
মৌখিক পরীক্ষা হয়ে গেলে কাগজপত্র দিল্লিতে আইসিসিআরের হেডঅফিসে পাঠানো হয়। সেখান থেকে তারাই আপনার একাডেমিক ফলাফলের ভিত্তিতে আপনার 'ভাগ্য' নির্ধারণ করেন। এক্ষেত্রে, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার নম্বর, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এটা যারা স্নাতক পড়তে আসবেন তাদের জন্য।



যারা স্নাতকোত্তর পড়তে আসবেন তাদের জন্য স্নাতকের ফলাফলও স্বভাবতই দেখা হবে। আর যারা এমফিল, পিএইচডি করতে আসবেন, তাদের ক্ষেত্রে এসবের সঙ্গে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হলো 'সিনোপসিস' বা 'গবেষণা প্রস্তাব'। আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বা দেশে যারা গবেষণা করছেন তাদের কাছে পরামর্শ নিয়ে সেটা ৭-৮ পৃষ্ঠার মধ্যে তৈরি করে ফেলুন খুব দ্রুত। আবেদনপত্রের সঙ্গেই এটা পাঠাতে হবে। আমার সুবিধা ছিল, আমার সিনোপসিস তৈরিই ছিল; প্রথমবার যথাসময়ে পাসপোর্টটা হাতে না থাকা ও মৌখিক পরীক্ষার পর বাদ পড়ার দুঃখ এখানেই মূলত লাঘব হয়েছে!



ফর্মে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় ও তিনটি কোর্সের নাম লিখতে হবে, আপনার পছন্দের ক্রম অনুযায়ী। বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা আইসিসিআর দিয়ে দেয় এবং প্রতিটিই মানসম্মত। আপনি কোন কোর্স পড়তে চান, সে অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় খুঁজুন। আর পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে পছন্দের কোর্স থাকলে তো কথাই নেই। তবে, আপনার প্রথম পছন্দের কোর্সটি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও, বিশ্ববিদ্যালয় যে পছন্দানুযায়ী পাবেন এর কোন নিশ্চয়তা নেই। কারণ, এই সিদ্ধান্ত নেয়ার একমাত্র এখতিয়ার আইসিসিআরের।



আর কোর্সের ক্যাটাগরি একই হতে হবে। একই সঙ্গে আপনি সায়েন্স, আর্টস, সোশ্যাল সায়েন্স বা কমার্স ব্যাকগ্রাউন্ডের তিনটি কোর্স দিতে পারবেন না। সুতরাং, নিয়ত ঠিক করুন, কোন ব্যাকগ্রাউন্ডে জীবন গড়বেন!
আর গবেষকদের জন্য নিয়ত একটিই। এটা নিয়ম না, কাণ্ডজ্ঞান। আপনি তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পছন্দ তো অবশ্যই দেবেন, কিন্তু টপিক দেবেন একটি। তিনটি দিতে গেলে তাদের ধারণা হবে, আপনার তো নিয়তই ঠিক নেই যে, আপনি কোন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হতে চান! অবশ্য, তিনটি টপিকের সিনোপসিস লেখার স্বপ্ন যদি আপনি এই অল্প সময়ে দেখেন, তাহলে আপনাকে ‘রাহুল সাংকৃত্যায়ন’ পুরস্কার দেওয়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে! সাংকৃত্যায়ন বাবু যে একই সঙ্গে দশটি বই লেখার বা অনুলেখকদের দিয়ে লেখানোর ক্ষমতা রাখতেন, সে কথা নিশ্চয়ই আপনার জানা!



যাই হোক, এটা মজা করেছি। এতো বড় লেখায় একটু মজা না করলে ক্লান্তি চলে আসতে পারে! আবার সিরিয়াস হই।
১০ পৃষ্ঠার মধ্যে শেষ তিনটি পৃষ্ঠা থাকে ফিজিক্যাল ফিটনেস সংক্রান্ত। ওই পৃষ্ঠা তিনটি একজন পরিচিত এমবিবিএস ডাক্তারের মাধ্যমে পূরণ করে নিয়ে তার সিল-স্বাক্ষরসহ স্ক্যান করে আবার যথা-ক্রমিকে সংযুক্ত করতে হবে।
দু’জন পরিচিত ব্যক্তির রিকোমেনডেশন লেটার/ক্যারেক্টার সার্টিফিকেট লাগবে আলাদা আলাদা করে। তারা শিক্ষাপেশায় জড়িত থাকলে খুব ভালো হয়। তাদের নাম ফর্মে লিখতে হবে। তাদের পরের ক্রমিকেই ভারতে যদি কোন আত্মীয় থাকে, তার/তাদের বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে। না থাকলে N/A লিখে দেবেন।



আলাদা আলাদা ফাইলে ডাটাশিট, একাডেমিক সার্টিফিকেট, মার্কশিট, পাসপোর্টের প্রথম পেজ, দুটি রিকোমেনডেশন লেটার, সর্বশেষ পাশ করা শ্রেণীর সিলেবাস ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে সিনোপসিস সংযুক্ত (এটাচ) করতে হয়। একটা একটা করে স্ক্যান করে পিডিএফে কনভার্ট করে ফেলুন। পিডিএফ ব্যতিত অন্য কোন ফরম্যাটে এটাচ ফাইলগুলো পাঠালে, আপনার আবেদন বাতিলও হয়ে যেতে পারে।



যাদের সিলেবাস বাংলায় লেখা, তারা অতিদ্রুত সেটা ইংরেজিতে অনুবাদ করুন। এইচএসসি লেভেলের সিলেবাস ফেসবুকে কিংবা যারা গত শিক্ষাবর্ষে এসেছেন তাদের কাছে পাবেন; ফলে আপনাদের চিন্তা নেই। কিন্তু, বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক পর্যায়ের সিলেবাস (যদি ইংরেজিতে না হয়) আপনাকে নিজ দায়িত্বেই অনুবাদ করতে হবে মার্কশিটের সাহায্য নিয়ে। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের শিক্ষার্থী হিসেবে আমাকে তা-ই করতে হয়েছিল। তার পর বিভাগীয় সিল লাগিয়ে নিয়ে সেটাকে বৈধ করে নেবেন।



সিলেবাস যুক্ত করার বিষয়টি কোন বার চাওয়া হয়, কোন বার চাওয়া হয় না। তবু, প্রস্তুতি নিয়ে রাখুন। স্নাতকোত্তরের সিলেবাস ছোট, তবুও আমার ‘ত্রাহি মধুসূদন’ দশা হয়েছিল। সুতরাং, স্নাতকের সিলেবাস অনুবাদের ক্ষেত্রে কী খাটুনি করতে হবে বুঝতেই পারছেন!
মনে রাখবেন, বিজ্ঞপ্তি হয়ে গেলে হাতে ১০ দিনের বেশি সময় পাবেন না হয়তো। বুঝতেই পারছেন, এই সময়ের মধ্যেই অসংখ্য কাগজ জোগাড় করতে হয়। সুতরাং, দ্রুতই মাঠে নেমে পড়ুন!



পরীক্ষাটা (পরীক্ষা যেমনই হোক) হয়ে গেলে, আবেদনপত্রের সঙ্গে যা যা (ডাটা শিট বাদে) মেইল করেছেন সেগুলো সবই অন্তত ১০ কপি এবং পাসপোর্ট সাইজের অন্তত ২০ কপি ছবি প্রথম শ্রেণীর গ্যাজেটেড অফিসার কর্তৃক সত্যায়িত করে রাখবেন। কারণ, আপনি আগে থেকে তো জানবেন না যে, আপনার মৌখিক পরীক্ষা কবে! মৌখিক পরীক্ষার দিন এসব কাগজ ছবিসহ আবেদনপত্রের সঙ্গে সংযুক্ত করে ৭-৮ সেট স্পাইরাল করে নিয়ে যেতে হয়। আর সকল সত্যায়িত কাগজে সত্যায়নকারীর সিলটা ইংরেজিতে হওয়া বাঞ্ছনীয়।



আপনি স্কলারশিপ পেয়ে গেলে ভিসা প্রক্রিয়াসহ আর কী কী করতে হবে, সেগুলো হাইকমিশনের শিক্ষা শাখা থেকেই আপনাকে বলে দেবেন চমৎকার কয়েকজন বাংলাদেশের মানুষ। বিশ্ববিদ্যালয় ভেদে কারও ডাক আগে আসে, কারও পরে। সাধারণত, জুন-জুলাই মাস থেকেই ডাক আসতে শুরু করে। সুতরাং, পরিচিত কারও হয়ে গেলে, আপনার ঘাবড়ানোর কিছু নেই। Tomorrow is waiting for your smile!
যদি সেই Tomorrow এ বছর না এসে পরের বছরও আসে, তবুও হাসি মনে মেনে নিয়ে সামনে এগিয়ে যান। কোথাও না কোথাও আপনার জন্য একটা না একটা সুযোগ অপেক্ষা করে আছে নিশ্চয়ই!



শেষ কথা একটাই, মনে রাখবেন, আপনি বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন। আবেদনপত্র পূরণ থেকে শুরু করে স্কলারশিপ পেয়ে পড়ালেখা শেষ হওয়া পর্যন্ত এমন কিছু করা ঠিক হবে না, যা ‘বাংলাদেশ’ নামটিকে বিব্রত করে!
সকলের জন্য আগাম শুভ কামনা!
বি.দ্র.: আমি কথাগুলো বললাম গত বছরের অভিজ্ঞতার আলোকে। এ বছর পরিবর্তনও হতে পারে কিছু কিছু ক্ষেত্রে, নাও হতে পারে। কারণ, গত বছরের সঙ্গে তার আগের বছরের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পূরণ ও চাহিদার কিছু ভিন্নতা আছে। সুতরাং, এই লেখাকে শিরোধার্য ধরার দরকার নেই। সামান্য গাইডলাইন হিসেবে নেওয়াটাই যুক্তিযুক্ত হবে। প্রশ্ন থাকলে কমেন্টের ঘরে করতে পারেন। 


সৌমিত জয়দ্বীপ
গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয় 

Comments

    ক্যাটাগরি 

    All
    GMAT
    GRE
    MBA
    Oxford
    SOP
    Undergraduate
    USA





    ​আর্কাইভ 

    January 2020
    August 2019
    June 2019
    November 2018
    October 2018
    September 2018
    July 2018
    March 2018
    February 2018
    January 2018
    March 2017
    January 2017
    November 2016
    October 2016
    August 2016
    July 2016

    RSS Feed

Powered by Create your own unique website with customizable templates.