বাইরে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট পড়তে যাওয়ার জন্য যাদের প্রথম পছন্দ যুক্তরাষ্ট্র বা কানাডা, স্যাট (SAT) তাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পরীক্ষা। ইউএস-কানাডা ছাড়াও নামকরা প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী হিসেবে আপনার দক্ষতা মাপার জন্য স্যাটের স্কোর আমলে নিয়ে থাকে। এদের মধ্যে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আন্ডারগ্র্যাজুয়েট স্যাট স্কোর জমা দেয়া বাধ্যতামূলক। তবে যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে এটি বাধ্যতামূলক নয়, সেসব ক্ষেত্রেও স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য স্যাট পরীক্ষার স্কোর লাগে। মূলত বিভিন্ন দেশের আবেদনকারীদের মধ্যে তুলনামূলক মেধাবী শিক্ষার্থী বেছে নিতে স্যাটকে এডমিশন অফিসাররা গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে থাকেন। স্যাট পরীক্ষার মোট সময় ৩ ঘন্টা। আর অপশনাল হিসেবে থাকা Essay সেকশনে অংশ নিলে মোট সময়ের সাথে আরও ৫০ মিনিট যোগ হবে। আগে Essay সেকশন বাধ্যতামূলক থাকলেও নতুন স্যাটে এটি অপশনাল। এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আবেদনকারীকে নিতে হয়। অপশনাল Essay দিবো নাকি দিবো না? এক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো আপনার জানা দরকার- প্রথমত, মূল স্যাট স্কোর এবং রচনার স্কোর আলাদা করে হিসাব করা হবে। মূল স্যাট হবে ১৬০০ নাম্বারের আর রচনায় তিনটি সেকশনে মোট ২৪ নাম্বারের। এই দুটি একসাথে হিসাব করা হবে না। দ্বিতীয়ত, অনেক বিশ্ববিদ্যালয় Essay চায় এবং অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ই চায় না। বিখ্যাত আইভি লিগের ক্ষেত্রেও এটা সমভাবে প্রযোজ্য। কোথায় কোথায় আবেদন করবেন তা যদি ঠিক করে ফেলেন তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর রিকোয়ারমেন্ট দেখে সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। আপনার পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়ে Essay লাগবে কিনা তা চট করে [school name] SAT essay requirement লিখে গুগলে সার্চ করে দেখতে পারেন। এরপর সেখানে Essay চাচ্ছে না শুধু সেই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো টার্গেট করতে পারেন। আরেকটি ব্যাপার হলো Essay দিলে সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয়েরই রিকোয়ারমেন্ট পূরণ করতে পারছেন। তবে এজন্য পড়ার বোঝাও বেড়ে যাচ্ছে। মানবন্টন ২১০৬ সালের মার্চ মাস থেকে স্যাট পরীক্ষায় বেশ কিছু পরিবর্তন এসেছে। নতুন পরীক্ষা কাঠামোয় স্যাট পরীক্ষার মোট নাম্বার ১৬০০। প্রতিটি সেকশনে ৮০০ নম্বর। এর সাথে অপশনাল হিসেবে থাকছে Essay রাইটিং। স্যাটে সর্বনিম্ন ৪০০ এবং সর্বোচ্চ ১৬০০ নাম্বার পাওয়া সম্ভব। পরীক্ষার্থীরা গড়ে ১০৬০ পেয়ে থাকেন স্যাটে। ম্যাথমেটিকস সেকশনে অধিকাংশ প্রশ্নই এমসিকিউ ধরণের। ভুল উত্তরের জন্য নাম্বার কাটবে না। এর মধ্যে প্রথম ভাগে আসা ২০টি প্রশ্নে ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা যাবে না। তবে পরের গুলোয় সাইন্টেফিক ক্যালকুলেটর ব্যবহার করা যাবে। পাটিগণিত, বীজগণিত, জ্যামিতি ও ত্রিকোণমিতি-সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানজনিত প্রশ্ন মানে অংকে ভালো হলে এখানে অনেকটাই এগিয়ে যাবেন। এভিডেন্স বেজ্ড রিডিং- রাইটিং সেকশনে এইচএসসি ১ম পত্রে যেমন একবারে প্রথমে প্যাসেজ দেয়া থাকে এবং তা পড়ে এমসিকিউ দেয় অনেকটা ওরকম। ছোট-বড় বিভিন্ন passage পড়ে অনুধাবন করার ও তার ওপর প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার ক্ষমতা যাচাই করা হয়। মানে এখানে আপনার ইংরেজিতে পারদর্শিতা কাজে লাগবে। আবেদন করবেন যেভাবে স্যাট পরীক্ষা দেওয়ার জন্য প্রথমেই স্যাটের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে অনলাইনে নির্দিষ্ট ফি জমা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। যাদের পক্ষে ক্রেডিট কার্ড দিয়ে ফি জমা দেয়া সম্ভব না তারা আমাদের মাধ্যমে ফি জমা দিতে পারবেন। আমাদের ফেসবুক পেজে মেসেজ করলে সেদিনের ডলার রেট অনুযায়ী ফি জমা দেয়ার জন্য নির্দিস্ট পরিমাণ টাকা বিকাশ করলে আমরা ফি জমা করে দিবো। পরীক্ষা দেওয়ার কমপক্ষে এক মাস আগে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করা জরুরি। বাংলাদেশে রচনাসহ স্যাট পরীক্ষা দেওয়ার জন্য খরচ পড়বে ১১৩.৫ ইউএস ডলার, রচনা ছাড়া ৯৬.৫ ইউএস ডলার। রেজিস্ট্রেশনের জন্য প্রয়োজন হবে পাসপোর্ট এবং ছবি। রেজিস্ট্রেশন করার পর ওয়েবসাইট থেকে যে প্রবেশপত্র দেওয়া হবে তাতে পরীক্ষার দিন, সময় ও কেন্দ্র উল্লেখ করা থাকবে। পরীক্ষার দিন পরীক্ষার্থীকে প্রয়োজনীয় আরও কী কী নিয়ে যেতে হবে তাও বলা থাকবে প্রবেশপত্রে। ঢাকা এবং চট্টগ্রামে বেশ কয়েকটি সেন্টারে পরীক্ষা দেয়া যাবে। প্রস্তুতি একাদশ শ্রেণিতে ওঠার পর স্যাটের জন্য প্রস্তুতি শুরু করা যেতে পারে। ব্যারনস এবং প্রিন্সটন বুক রিভিউয়ের বই, কলেজ বোর্ড থেকে প্রকাশিত অফিশিয়াল স্যাট বই কিনে ঘরে বসেও প্রস্তুতি নেয়া সম্ভব। বইগুলোর ফটোকপি এডিশন বা সেকেন্ডহ্যান্ড কপি নীলক্ষেতে কম দামে পাবেন। SAT দেয়ার উপকারিতা শুধু এইচএসসি দিয়ে বিশ্বের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েই আবেদন করতে পারবেন না। তবে সাথে SAT এ ডিসেন্ট স্কোর ( জরুরী না যে ১৬০০ তে ১৫০০+ হতে হবে) আর আইইএলটিএস স্কোর থাকলে শুধু আবেদনই না, কোরিয়ার KAIST বা তুরস্কের METU এর মত বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুল ফান্ডও পাওয়া খুবই সম্ভব। শিক্ষার মানের দিক থেকে এগুলো আমাদের বুয়েট, ঢাবির থেকে অনেক অনেক এগিয়ে। প্রসঙ্গত, KAIST এ ভর্তির সুযোগ পাওয়া প্রত্যেক বিদেশী শিক্ষার্থীকে স্কলারশিপ দেয়া হয় যা পুরো টিউশন ফি কভার করে এবং এর আওতায় মাসে একটি নির্দিস্ট এমাউন্ট স্টাইপেন্ড হিসেবে দেয়া হয়। এর বাইরে বিভিন্ন দেশের এভেইলেবল সরকারী স্কলারশিপগুলোতেও অন্যদের থেকে এগিয়ে যাবেন SAT এর কারণে। চার্ম গ্লোবাল স্কলারশিপ ২০১৯ (আন্ডারগ্র্যাজুয়েট) নিড ব্লাইন্ড এডমিশন- জানার আছে অনেক কিছু |