সম্প্রতি কমনওয়েলথ শেয়ারড স্কলারশিপ ২০২১ এর জন্য আবেদন নেয়া শুরু হয়েছে। বাংলাদেশসহ ২৫ টি দেশের শিক্ষার্থীরা এবছর কমনওয়েলথ শেয়ারড স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবে। এই স্কলারশিপ নিয়ে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা ইউকে তে মাস্টার্স প্রোগ্রামে আবেদন করতে পারবে। চলুন জেনে নেয়া যাক এর খুঁটিনাটি বিষয়গুলো।
স্কলারশিপের আওতায় যা যা পাবেন- ১। পুরো টিউশন ফি ২। মাসে ১১১৬ (লন্ডন মেট্রোপলিটন এরিয়ার ভিতরে বিশ্ববিদ্যালয় হলে ১৩৬৯ পাউন্ড) স্টাইপেন্ড। বাংলাদেশী টাকায় যা প্রায় ১ লাখ ৩২ হাজার টাকা ৩। আসা-যাওয়ার বিমান ভাড়া ৪। প্রয়োজন অনুসারে গরম কাপড়ের জন্য এলাওয়েন্স এছাড়া আবেদনকারী বিধবা, ডিভোর্সড বা সিঙ্গেল প্যারেন্ট হলে সাথে করে যাওয়া সন্তানদের জন্য মাসিক ভাতা পাবেন। দ্যা কমিউনিটি কলেজ ইনিশিয়েটিভ প্রোগ্রাম (CCI) ইউএসের কমিউনিটি কলেজগুলোতে একবছর পড়াশোনা করার জন্য স্কলারশিপ দিয়ে থাকে। ২০২১-২২ সেশনের জন্য এই স্কলারশিপের আবেদন শুরু হয়েছে। এটি মূলত নন-ডিগ্রী প্রোগ্রাম তবে শিক্ষার্থীরা প্রোগ্রাম শেষে ২ সেমিস্টার বা এর সমমান ক্রেডিট অর্জন করবে।
বাংলাদেশসহ আরো কিছু সিলেকটেড দেশের শিক্ষার্থীরা এই প্রোগ্রামের জন্য আবেদন করতে পারবে। ২০০৭ থেকে শুরু হওয়া এই প্রোগ্রামের আওতায় এখন পর্যন্ত ১৫ টি দেশের প্রায় ২১৫০ শিক্ষার্থী ইউএসের কমিউনিটি কলেজে পড়েছে। এরমধ্যে শুধু বাংলাদেশ থেকেই ছিল ৫৫ জন। এই স্কলারশিপটি মূলত যারা এইচএসসি শেষ করেছেন বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ম বর্ষে আছেন তাদের জন্য। প্রতিবছর ইরাসমাস মুন্ডুস স্কলারশিপের আওতায় বেশকিছু প্রোগ্রাম ফুল ফান্ডিং নিয়ে মাস্টার্স করা যায়। সাধারণত সেপ্টেম্বরের দিকে আবেদন নেয়া শুরু হয়। এবার প্রায় ৭৫ এরও অধিক প্রোগ্রামে ইরাসমাস মুন্ডুস স্কলারশিপের ফান্ডিং রয়েছে। বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরাও এই প্রোগ্রাম গুলোতে আবেদন করতে পারবে। সবগুলো প্রোগ্রামের ব্যাপারে লেখা আমাদের পক্ষে সম্ভবপর নয়। আমরা ১০-১২ টি প্রোগ্রাম ফিচার করার চেষ্টা করবো। তবে বাকি প্রোগ্রামগুলোতে আবেদনের ক্ষেত্রেও আমাদের অনলাইন সাপোর্ট নিতে পারবেন।
ইরাসমাস মুন্ডুস মাস্টার ইন ইকোনমিক পলিসিস ফর দা গ্লোবাল ট্রানজিশন প্রোগ্রামটিতে তিনটি পাথওয়ে বা মেজর রয়েছে। আবেদনকারীরা এরমধ্যে থেকে তাদের মেজর বেছে নিতে পারবেন। কাতারের এক নম্বর বিশ্ববিদ্যালয় তথা কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টার্স, ডক্টরাল এবং পিএইচডি প্রোগ্রামে স্প্রিং ২০২১ সেশনের জন্য আবেদন নেয়া শুরু হয়েছে। আন্ডারগ্র্যাজুয়েটে আবেদন নেয়া হবে ১১ অক্টোবর থেকে। বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার ক্ষেত্রে কাতার বিশ্ববিদ্যালয় স্কলারশিপে আবেদন করতে পারবে। কাতারের এই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়টি রাজধানী দোহায় অবস্থিত। কিউএস বিশ্ববিদ্যালয় র্যাঙ্কিংএ বিশ্ববিদ্যালয়টির অবস্থান ২৪৫ তম।
কোভিড-১৯ এর কারণে পরবর্তী সেশনে ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট ভর্তি করানো হবে না। The Schwarzman Scholars বা শোয়ার্জম্যান স্কলার প্রোগ্রামের আওতায় Tsinghua University (তিংশুয়া বিশ্ববিদ্যালয়) তে Professional Master’s Degree in Global Affairs প্রোগ্রামের জন্য আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছে। রাজধানী বেইজিং এ অবস্থিত Tsinghua University ১৯১১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি চীনের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে একটি। বিশ্ব র্যাঙ্কিং এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ১৭ তম। The Schwarzman Scholars প্রোগ্রামে স্কলার্স মনোনয়নের ক্ষেত্রে একাডেমিক পড়াশোনার ছাড়াও নেতৃত্ব, এন্ট্রাপ্রেনারিয়াল গুণাবলি, অন্যান্য কালচার সম্পর্কে ধারণা,মনোভাব ইত্যাদি বিষয় বিবেচনা করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরাও এই প্রোগ্রামের জন্য আবেদন করতে পারবে।
গ্লোবাল কোরিয়া স্কলারশিপ ২০২১ (GKS-2020) এর গ্রাজুয়েট (মাস্টার্স, ডক্টরাল) পর্যায়ের আবেদন নেয়া শুরু হয়েছে। এটিই বিগত বছর ধরে দিয়ে আসা কোরিয়ান সরকারী স্কলারশিপ (KGSP)। সাধারণত সেপ্টেম্বরের দিকে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট এবং ফেব্রুয়ারিতে গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের জন্য আবেদন নেয়া হয়ে থাকে। গ্লোবাল কোরিয়া স্কলারশিপ ২০২১ এর জন্য এমব্যাসি এবং ইউনিভার্সিটি দুটি ট্র্যাকেই বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবে। তবে একজন আবেদনকারী একইসাথে উভয় ট্র্যাকে আবেদন করতে পারবে না। আবেদন করার জন্য যেকোনো একটি ট্র্যাক বেছে নিতে হবে। এমব্যাসি ট্র্যাকে ৩ টি বিশ্ববিদ্যালয় বা সাবজেক্টের নাম দেয়া যাবে আর ইউনিভার্সিটি ট্র্যাকে শুধু একটিতেই আবেদন করা যাবে।
এবার এমব্যাসি ট্র্যাকে ১৪৫ টি দেশের ৬৬৩ জন শিক্ষার্থীকে চূড়ান্তভাবে মনোনীত করা হবে। অন্যদিকে ইউনিভার্সিটি ট্র্যাকে ৭৭ টি দেশের ৬১৫ জন শিক্ষার্থীকে এই স্কলারশিপটি দেয়া হবে। বাংলাদেশের নাম দুটো ট্র্যাকেরই মনোনীত দেশের নামের তালিকায় রয়েছে। আমাদের দেশ থেকে এবার এমব্যাসি ট্র্যাকে ৫ জন এবং ইউনিভার্সিটি ট্র্যাকে ৯ জনকে মোট ১৪ জনকে গ্লোবাল কোরিয়া স্কলারশিপ ২০২১ দেয়া হবে। অস্ট্রেলিয়া এওয়ার্ডস স্কলারশিপের (Australia Awards Scholarship) আওতায় অস্ট্রেলিয়ায় মাস্টার্স পড়ার জন্য ২০২২ সেশনের জন্য বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদেরকে স্কলারশীপ দেয়া হবে। পারস্পরিক সহযোগিতা ও সম্প্রীতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে অস্ট্রেলিয়া সরকার সম্পূর্ণ মেধার ভিত্তিতে এ স্কলারশীপ দিবে। নির্বাচিত শিক্ষার্থী দেশটির সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে মাস্টার্স কোর্স পড়তে পারবে। রাউন্ড-ট্রিপ এয়ার টিকেট, টিউশন ফি, আবাসন ভাতাসহ শিক্ষার্থীর যাবতীয় খরচ কর্তৃপক্ষ বহন করবে। আবেদন করা যাবে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত।
উল্লেখ্য শুধু বিসিএস কর্মকর্তা, বাংলাদেশ ব্যাংক, জুডিশিয়াল সার্ভিসের কর্মকর্তা, এনজিও, প্রাইভেট সেক্টরে কর্মরত, ব্রাক এবং আইসিসিডিআর বি এর মত গবেষণা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এছাড়া একাডেমিয়া, মিডিয়া, কালচারাল ইন্সটিটিউশন এবং এন্ট্রাপ্রেনিউর বা উদ্যোক্তাদেরো আবেদন করতে উৎসাহিত করা হয়েছে। সিলেকটেড আবেদনকারীদের মধ্যে অন্তত ৫০% নারী আবেদনকারী রাখা হবে। কিং আব্দুল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলোজি(KAUST) লোহিত সাগরের তীরে অবস্থিত সৌদি আরবের অন্যতম একটি গ্র্যাজুয়েট লেভেলের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়। এর মোট ৯০১ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৬৩৩ জনই বিদেশী শিক্ষার্থী এবং ১৩৩ জন একাডেমিক স্টাফের মধ্যে ১৩০ জনই বিদেশী নাগরিক। গ্র্যাজুয়েট লেভেলে প্রকৌশল এবং প্রযুক্তি বিষয়ে পড়াশোনার ক্ষেত্রে বৈশ্বিক র্যাঙ্কিং এ এর অবস্থান ১৯৫ তম। কিং আব্দুল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলোজিতে ইংরেজি ভাষায় পাঠদান করা হয়ে থাকে। এটি সৌদি আরবের একমাত্র Co-Ed বিশ্ববিদ্যালয়।
সম্প্রতি কিং আব্দুল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলোজি এর ফল ২০২১ এর মাস্টার্স ও পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তির আবেদন শুরু হয়েছে। বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরাও এতে আবেদন করতে পারবেন। উল্লেখ্য যে ভর্তিকৃত সকল বিদেশী শিক্ষার্থীই কিং আব্দুল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলোজি ফেলোশিপ পেয়ে থাকে। প্রতিবছরের ধারাবাহিকতায় এবারো তুরস্ক সরকার তুরস্ক স্কলারশিপ ২০২১ বা তুর্কি বুর্সলারি স্কলারশিপ ২০২১ এর জন্যে আবেদন আহবান করেছে। এই স্কলারশিপের আওতায় তুরস্কের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আন্ডারগ্র্যাজুয়েট, মাস্টার্স এবং পিএইচডি করা যাবে। উল্লেখ্য যে, আন্ডারগ্র্যাজুয়েট লেভেলে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা মেডিকেল সায়েন্সেস, ইঞ্জিনিয়ারিং সহ আরো অনেক বিষয়ে পড়তে পারবে। এখানে সার্চ করে এভেইলেবল প্রোগ্রাম এবং তাদের রিকোয়ারমেন্ট দেখতে পারবেন। যারা ইতিমধ্যে YÖS পরীক্ষা দিয়েছেন বা দেয়ার জন্য আবেদন করেছেন তারাও এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন। এক্ষেত্রে YÖS ভাল স্কোর থাকলে টপ ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুলগুলোতে সুযোগ পাওয়ার ভাল সম্ভাবনা থাকবে। আজকে থেকে আবেদন শুরু হচ্ছে। তাই আবেদন করতে চাইলে প্রস্তুতি শুরু করে দিন।
যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও অনাকাঙ্ক্ষিত ভুলের কারণে অনেকে প্রাথমিক সিলেকশনেই বাদ পড়ে যান। প্রতিবারই এরকম হয়। তাই সঠিকভাবে আবেদনের প্রতি জোর দিন। নির্ভুলভাবে আবেদন সম্পন্ন করার জন্য আমাদের অনলাইন সাপোর্ট নিতে পারেন। নিজে নিজে আবেদনের ক্ষেত্রেও সঠিক তথ্য পেতে অফিশিয়াল সাইট এবং খোলা বাকসো ফলো করুন। অনেক ফেসবুক পেজ, গ্রুপ আমাদের পোস্ট কার্টেসি ছাড়া পোস্ট করে। পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতা এবং জানার ওভাবে এধরণের গ্রুপ-পেজ পরে অনেকক্ষেত্রে আবেদনে বিভিন্ন সমস্যার সমধানে মিসলিডিং তথ্য দেয়। তাই সতর্ক হোন। অন্তত স্কলারশিপের অফিশিয়াল সাইট থেকে যাচাই করে নিন। Chinese Govt. Scholarship এর আওতায় Under-graduate, Masters, Ph.D, General/Senior Scholar কোর্সের জন্য বাংলাদেশি নাগরিকদের নিকট হতে চায়না সরকারি স্কলারশিপ এর জন্য দরখাস্ত আহ্বান করা হচ্ছে। এই স্কলারশিপের আওতায় বাংলাদেশী শিক্ষার্থীরা চীনে পড়ার সুযোগ পাবে। এবার সবমিলিয়ে মোট ৫৩ জন বাংলাদেশিকে এই স্কলারশিপ দেয়া হবে। সিজিএস/সিএসসি (CGS/CSC) নামে অধিক পরিচিত এই স্কলারশিপের বিস্তারিত নিয়েই আজকের আয়োজন। চলুন জেনে নেয়া যাক বিস্তারিত।
স্কলারশিপের আওতায় যা যা পাবেন- ১। রেজিস্টেশন ফি, ২। টিউশন ফি, ৩। আবাসন ফি, ৪। আন্ডারগ্রাজুয়েট লেভেল শিক্ষার্থীদের জন্য মাসিক ভাতা ২৫০০ ইউয়ান যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৩১ হাজার টাকা ৫। মাস্টার্স ও ডক্টরেল লেভেলে ছাত্র/ছাত্রীদের জন্য মাসিক খরচ হিসেবে যথাক্রমে ৩০০০ ইউয়ান ও ৩৫০০ ইউয়ান প্রদান করা হবে। যা বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৩৭ হাজার ও ৪১ হাজার টাকা। তবে, ল্যাবরেটরি ও ইন্টার্নশিপ ফি এবং যাতায়াত খরচ নিজেদের বহন করতে হবে। উল্লেখ্য পার্শিয়াল স্কলারশিপের আওতায় উপরের এক বা একাধিক সুবিধা পাওয়া যাবে। |
Archives
February 2021
Categories
All
|